যাকাত সম্পর্কে কিছু জরুরী মাসায়েল

মাসআলাঃ যাকাত ইসলামের পঞ্চম স্তম্ভের একটি। যাকাত ফরয। যাকাত অস্বীকারকারী কাফির। স্বেচ্ছায় আদায় না করা ফাসেক্বী এটা ক্বতলযোগ্য অপরাধ। সময়মত আদায় না করাও গুনাহ। শরীয়তে এমন ব্যক্তির সাক্ষ্য গ্রহণযোগ্য নয়। [বাহারে শরীয়ত, যাকাত অধ্যায় থেকে]
মাসআলাঃ বছর শেষে এ নিয়্যতে মূল সম্পদ থেকে কিছু মাল আলাদা করে রাখলেই যাকাত আদায় হবে না যতক্ষণ ফক্বীর মিসকীনকে মালিক বানানো হবে না। এভাবে ফক্বীরকে যাকাতের নিয়্যতে আহার করালে বা কোন ঘরে বসবাস করতে দিলেও যাকাত আদায় হবে না। যেহেতু প্রদত্ত সম্পদের মালিক বানানো হয়নি। হ্যাঁ, যদি খাদ্যবস্তু দিয়ে দেয়, যা সে ইচ্ছে হলে খাবে কিংবা নিয়ে যাবে এভাবে পরিধানের কাপড় দিলেও যাকাত আদায় হবে। [বাহারে শরীয়ত, যাকাত অধ্যায় থেকে]
মাসআলাঃ যাকাত ওয়াজিব হওয়ার জন্যে কিছু পূর্বশর্ত রয়েছে। সেগুলো হচ্ছে-
১. মুসলমান হওয়া। সুতরাং অমুসলিমের উপর যাকাত ফরয নয়। তেমনি কোন কাফির ইসলাম গ্রহণ করলে তাঁকে কাফির থাকাকালীন সময়ের যাকাত দিতে হবে না।
২. বালেগ হওয়া। অতএব না বালেগের সম্পদের যাকাত নেই।
৩. আক্বল বা জ্ঞান সম্পন্ন হওয়া। অতএব সারা বছর পাগল অবস্থায় থাকা ব্যক্তির উপর ওই বছরের যাকাত ওয়াজিব নয়।
৪. আযাদী বা স্বাধীনতা। তাই দাস-দাসী মা’যূন কিংবা মুকাতাব কারো সম্পদে যাকাত ওয়াজিব নয়।
৫. সম্পদ নিসাব পরিমাণ হওয়া।
৬. নিসাব পরিমাণ সম্পদ পূর্ণ মালিকানা এবং আয়ত্বে থাকা।
৭. এ নিসাব পরিমাণ অর্থ কর্জের অতিরিক্ত হওয়া।
৮. জীবন ধারণে নিত্যপ্রয়োজনীয় সম্পদেরও অতিরিক্ত হওয়া।
৯. সম্পদ প্রবৃদ্ধিমূলক হওয়া। যেমন স্বর্ণ-চাঁদি ব্যবসার মাল এবং সা-ইমাহ অর্থাৎ এমন সব গৃহপালিত জন্তু যেগুলো স্বাধীনভাবে চারণভূমিতে বিচরণ করে ঘাস খেয়ে বেড়ায় এবং মালিকের পক্ষ থেকে কোন ব্যয় নির্বাহ করতে হয় না। মালিক সেগুলো দিয়ে চাষাবাদও করেনা।
১০. নিসাব পরিমাণ সম্পদে পূর্ণ এক বছর অতিবাহিত হওয়া। বছরের প্রারম্ভে শেষে নিসাব পরিপূর্ণ হয়েছে; কিন্তু মাঝখানে ঘাটতি হলে তা ধর্তব্য নয়।
মাসআলাঃ যাকাত আদায়কালীন কিংবা যাকাতের মাল পৃথক করার সময় নিয়্যত করা পূর্বশর্ত। কেউ সারা বৎসর নিয়্যতবিহীন দান-খয়রাত করতে থাকলে আর বৎসরান্তে যাকাতের নিয়্যত করলে যাকাত আদায় হবে না। -সুত্রঃ গাউসিয়া তারবিয়াতী নেসাব-

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply