সম্পদ, বিদ্বেষ ও শত্রুতা

আমীরুল মু’মিনীন হযরত ওমর ফারুক (রাঃ) এর নিকট যখন কাদেসিয়া যুদ্ধে বিজয়ী মালে গনীমত আনা হল, তখন তিনি তা উলট-পালট করে দেখতে ছিলেন এবং কাঁদতে ছিলেণ।
হযরত আবদুল ইবনে আউফ (রাঃ) আরজ করলেন, হে আমীরুল মু’মেনীন! এটা তো আনন্দ ও খুশীর সময়, দুঃখ ও ব্যথিত হবার তো সময় নয়। বললেন, হাঁ! তবে যে জাতির মধ্যে মাল এসে যায়, যে জাতির মধ্যে হিংসা, বিদ্বেষ ও শত্রুতা সৃষ্টি অপরিহার্য হয়ে পড়ে। (হিংসা, বিদ্বেষ ও শত্রুতা সৃষ্টি মাল সম্পদের অপরিহার্য ফসল, যা রাত দিন বাস্তব দেখা যাচ্ছে।)
হযরত রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু তা‌‌আলা আলাইহি ওয়া সাল্লাম)– এরশাদ করেছেন- প্রত্যেক উম্মতের জন্যে একটি ফেতনা আছে, আমার উম্মতের ফেতনা হলো মাল।
তিনি হযরত রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু তা‌‌আলা আলাইহি ওয়া সাল্লাম)– আরো ফরমায়েছেন, আল্লাহ্ তা’আলার সবচে প্রিয়তম বান্দাহ হলো গরীব ও দরিদ্রগণ, এ জন্যেই অধিকাংশ নবীগণ আলাইহিমুচ্ছালাম সম্পদশালী ছিলেন না।
আহাদীছ

ا) قَالَرَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسُلَّمَ مَاذِئْبَانِ جَائِعَانِ اَرْسِلاًقِئْ غَنَمٍ بِاَفِسَدٍ لَّهَا مَنْحَرَضَ الْمَاك عَلَى الْمَالُ وَالشَّرَفُ  لِدِيْنِه – ترمذى شريف

১। “হযরত রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু তা‌‌আলা আলাইহি ওয়া সাল্লাম)– এরশাদ করেছেন- দুটি ভূখার্ত নেকড়ে বাঘ বকরীর জন্যে এতটুকু বিপজ্জনক নয়, যতটুকু মাল ও সম্পদের লোভ দ্বীনের জন্যে বিপজ্জনক”। তিরমিজী শরীফ

ب) يَهْرَمُ ابْنِ اَدَمُ وَيَشُبُّ مِنْهُ اِشْنَانِ الْحَرلَصِ عَلَى الْمَال وَالْحَرَص عَلَى الْعُمَرُ – (متفق عليه)

২। মানুষ বুড়ো হতে থাকে কিন্তু তার দুটি জিনিস জওয়ান হতে থাকে- ক) মাল বৃদ্ধির লোভ ও খ) অধিক বয়স বৃদ্ধির লোভ। – বুখারী ও মুছলিম শরীফ।

ت) لاَيَزَالُ قَلْبُ الْكَبِيْرُ شَابًّا قِىْ اِثْنَيْنِ قِىْ حُبِّالدُّنْيَا وَطَوْلُ الْمَامِلُ (متفق علييه)

৩। বৃদ্ধ মানুষের মন সব সময় দুটি বিষয়ে যুবক থাকে খ) দুনিয়ার মুহব্বত ও খ) দীর্ঘ আকাংখা।- বুখারী ও মুসলিম শরীফ।

ث) اُعْذُرُ اللهِ الَى اَمَرَاَخَرَاَجِلَّه‘ حَتَّى بَلِّغْه‘ سِتِّيِنَ سَنَةً (بخارى)

৪। যে ব্যক্তির বয়স আল্লাহ্ তা’আলা ষাট বছরে পৌঁছিয়ে দিয়েছেন, তার ওজর করার অবকাশ নাই।
অর্থাৎ মানুষ যৌবন কালে এই ধারণা করে যে, এখনো তো বার্ধ্যক্য কাল অনেক দূরে আছে, বার্ধক্য কালের নিদর্শন প্রকাশ পেলেই তওবা করে নেবো। কিন্তু বয়স যখন ষাট বছরে পৌঁছে যায়, তখন তার জন্যে কোন ওজর করার সুযোগ থাকেনা, যদ্দরুন সে তওবা করতে বিলম্ব করতে পারে। সুতরাং তাকে তৎক্ষনাৎ তওবা করার প্রতি মানোনিবেশ করা উচিত, কর্তব্য।

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply